মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
এস.এম অলিউল্লাহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে ১১ বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর উপজেলার সদরে গত শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ওই ধর্ষকের নাম জহর আলী (জল্লা)। তিনি নবীনগর পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা। ভিকটিমের পারিবারিক সূত্রে যানা যায়, ময়মনসিংহের হত-দরিদ্র একটি পরিবার গত ৩বছর ধরে নবীনগর ফতেহপুর রোড সংলগ্ন বাসার মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকেন। গত (১৬ জুলাই) রোজ শুক্রবার দুপুরে ১২ ঘটিকায় পাশের একটি মুদির দোকানে সদাই নিতে আসলে একই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা জহর আলী (৪৫) ফাকা বাসায় ডেকে নিয়ে ঘরের দরজা আটকিয়ে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ কালে তরুণীর আত্মচিৎকারে পার্শ্ববর্তীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন। গত ৩ বছর ধরে তিনি এই এলাকায় ভাড়া থাকেন। আগে মানুষের বাসায় কাজ করতেন। বর্তমানে ভিক্ষাবৃত্তি করেন। মেয়েটির বাবা ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ হওয়ায় মিয়েটিকে নানিই ছোট থেকে লালন পালন করেন। কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি আরো বলেন, মানুষের বাড়িতে অহন আর কাজ দেই না। করোনা আহনের পর থাইকা মানুষের বাড়িতে আগের মতন ঢুকতেও দেইনা। অতি কষ্টে নিজে খেয়ে না খেয়ে মাইনসের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা করে এ পর্যন্ত লালন পালন করে করছি। আমার শিশুসুলভ নাতনীকে ডেকে নিয়ে এত বড় সর্বনাশ করেছে আমি এখন আমার নাতনীকে বিয়ে দেবো কেমন করে। আমি এই বিষয়ে স্থানীয় ২-নং ওয়ার্ড কমিশনার ও মাতাব্বরদের কাছে বিচার দাবী করি। তারা এর সুষ্ট বিচার করবেন বলে আশ্বাস দেন। আজ ১৮ জুলাই বাদ আছর স্থানীয় মাতব্বররা মোহন মিয়ার বাড়িতে সালিশি বসান। উক্ত সালিশি দরবারে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান ওয়ার্ড কমিশনার আবু তাহের মিয়ার বড় ভাই বিরাজ মিয়া, স্থানীয় মাতব্বর মাজু মিয়া, হবি মিয়া, মাইনুদ্দিন মিয়াসহ এলাকার অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ধর্ষণ ঘটনার সত্যতা প্রমাণের পর ধর্ষণকারীকে ক্ষমা চাওয়া ও ৫হাজার টাকা জরিমানা ধার্য্য করেন। এই বিচার মানতে নারাজ ভিকটিম ও ভিকটিমের নানী। আরো জানা যায় নানী নাতনীকে বিভিন্ন ভয় ভীতি দেখিয়ে বলেন তোমাদের বাড়িতো এই এলাকায় না তোমরা আর কি করতে পারবে। আমরা ৫ হাজার টাকা ধার্য্য করে দিয়েছি। আর তোমরা থাকো তোমাদের আর কিছুই হবে না। স্থানীয় সালিশিদের এমন বিচারে হতাশ ভিকটিম ও এলাকার তরুণ সমাজ। বিচারের রায় ঘোষণার পর সন্ধ্যায় এলাকার তরুণ ছেলেদের রাস্তায় স্লোগান দিতে শুনা যায়। ‘ধর্ষণের বিচার ৫ হাজার টাকা হলে ধর্ষণ হবে ঘরে ঘরে’ ‘জহর আলী (জল্লার) গালে জুতা মারো তালে তালে’। আদালতের বাইরে পল্লি অঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কমবেশি সালিশি ব্যবস্থা এখনও বিদ্যমান। ছোটখাটো ঝগড়া-বিবাদ কিংবা মারামারির মতো ঘটনাও মীমাংসা হয় এ সব সালিশের মাধ্যমে। কিন্তু এই ঘটনাই স্থানীয় সালিশিরা একটা অন্যায় ও অপরাধকে প্রশ্রয় দিয়ে ময়মনসিংহের হতদরিদ্র পরিবাররের প্রতি চরম অন্যায় করেছে বলে দাবী তরুণ সমাজ ও এলাকাবাসীর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন তরুন সালিশি মাতাব্বররা ধর্ষণ বিচারের যে রায় দিয়েছেন তাদের নিজের মেয়ে হলে কি পারতেন এই রায় মেনে নিতে। এই দিকে সুষ্ট বিচার না পেয়ে ভিকটিম বলেন আমরা গরিব ও অন্য জেলার মানুষ হওয়ায় সুষ্ট বিচার পাইনি। আমরা এই বিচার মানিনা। আমরা গরিব বলে কি আমাদের কোনো মাণ ইজ্জৎ নেই। এই বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনারে সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তাকে ফোনে পাওয়া যাইনি। কমিশনারে বড় ভাই বিরাজ মিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এই ঘটনার সত্যাতা শিকার করে বলেন। আমরা স্থানীয়ভাবে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সুষ্ট বিচারের লক্ষে কান ধরে উঠবসসহ ভিকটিমের কাছে ক্ষমা চাওয়া ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করে দিয়েছি।